প্রকাশিত: মে ৫, ২০২১
ডেস্ক নিউজ:: সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতিত হয়ে মারা যাওয়া রায়হান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
চার্জশিটে উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (বরখাস্ত) প্রধান আসামি করে পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৫ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় পিবিআই সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবীর এ কথা জানান।
১৯৬২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি সংশ্লিষ্ট আদালতে জমা দেয়ার পরপরই সংবাদ সম্মেলন ডেকে পুরো তদন্ত কার্যক্রম ও আসামিদের ব্যাপারে অবগত করা হয়। চার্জশিটে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির টু-আইসি এসআই মো. হাসান উদ্দিন ও গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আসামি করা হয়েছে।
এরমধ্যে এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, এএসআই আশেকে এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে রায়হান উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্যাতন করে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়। আর এসআই হাসান ও নোমানের বিরুদ্ধে ঘটনার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে আটক আছেন। শুধুমাত্র আব্দুল্লাহ আল নোমান পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ১১ অক্টোবর রায়হান আহমদকে নগরের কাষ্টঘর সুইপার কলোনি থেকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় এক পুলিশ সদস্যের মোবাইল ফোন থেকে বাসায় কল করে রায়হান বলেছিলেন তাড়াতাড়ি ১০ হাজার টাকা নিয়ে ফাঁড়িতে গিয়ে তাকে বাঁচাতে। পরে আহতাবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রায়হানের মৃত্যু হয়।
রায়হানের তার চাচা ফাঁড়িতে ছুটে গেলেও পুলিশ জানায়, রায়হান অসুস্থ হওয়ায় তাকে ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে গিয়ে মর্গে রায়হানের লাশ পান স্বজনরা।
এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যুর ধারায় মামলা করেন। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পিবিআই।
পিবিআই দায়িত্ব নেওয়ার পর রায়হানের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে তার শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ-এসএমপির তদন্ত কমিটির কাছে প্রথমে হত্যার বিষয়টি ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা অস্বীকার করেন। পরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখানো হলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে।
এর ভিত্তিতে ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
রায়হান হত্যা মামলায় এসআই আকবর ছাড়াও পুলিশের আরও ৩ সদস্য এবং ১ জন সোর্সকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির বরখাস্ত এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস এবং সোর্স সাইদুর শেখ।