প্রকাশিত: মে ২, ২০২০
অনি চৌধুরীঃ দেশের অনেক জেলার ন্যায় মৌলভীবাজারেও চলছে লকডাউন। দিনের পর দিন ঘরে থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন এখানকার চা শ্রমিকেরা। বিশেষত যোগাযোগ ব্যবস্থাহীন দুর্গম এলাকার বাগানিদের অসহায়ত্বের কথা বারবার উঠে এসেছে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে। এ পরিস্থিতিতে শ্রমনির্ভর এ মানুষগুলোর কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
শুক্রবার (১ মে) রাত ৮টা থেকে গভীর রাত ৩ টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপজেলাধীন কালিটি চা বাগানের দুর্গম এলাকায় বসবাসকারীদের মধ্যে এ ত্রাণ বিতরণ করা হয়। যেসব শ্রমিকের বাসস্থান গাড়ি যাওয়ার রাস্তা থেকে অনেক দূরে, সেখানে র্যাব সদস্যরা ত্রাণের বস্তা কাঁধে বহন করে দুর্গত মানুষদের নিকট খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। খাবারের মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, সেমাইসহ ইফতার সামগ্রী। এ ক্ষেত্রে র্যাব ত্রাণ গ্রহণকারী পরিবারকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দেয়ার বদলে দরজার সামনে ত্রাণ রেখে চলে আসার কৌশল নেয়। এভাবে রাতভর কালিটি বাগানসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক ত্রাণের প্যাকেট বিতরণ করা হয়। ইতিপুর্বে একাধিকবার তিনি চা শ্রমিকসহ বিভিন্ন নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, মাঠ পর্যায়ে কাজ করার কারনে প্রকৃত ভোগান্তিতে কারা আছেন, তার একটা চিত্র আমাদের কাছে আছে। এর ভিত্তিতেই মূলত নিজেদের টাকায় সামান্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আমরা তাদের দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছি। গভীর রাতে ত্রাণ দেয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দিনের বেলায় তো আমরা নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত কাজে ব্যস্ত থাকি। আর রাতে চুরি ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ড ঠেকাতে থাকে টহল ডিউটি। তো যেদিন যে এলাকায় টহল ডিউটি করি, আগে থেকে আমরা সোর্সের মাধ্যমে ঐ এলাকার প্রকৃত সমস্যাগ্রস্থ মানুষের খোঁজ নিয়ে রাখি। তাতে করে টহল দেয়ার পাশাপাশি ঐ দুর্গত মানুজনদের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব হয়। এ সময় তিনি করোনাভাইরাসে কাউকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার পর মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সারাদেশে আলোচনার ঝড় তোলেন এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম।