৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

মৌলভীবাজারে ‘পরকীয়ার জেরে’ বড় ভাইকে হত্যা

প্রকাশিত: মে ২, ২০২০

ফেইসবুক শেয়ার করুন

ডেস্ক সংবাদ :: মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আনিকেলীবড় এলাকায় বাড়ি থেকে নিখোঁজের একদিন পর খাল থেকে এক জনের লাশ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১ মে) বিকেলে এই লাশ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার ভেতরে বেরিয়ে আসে হত্যার মূল কারণ ছিল ‘পরকীয়া’।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ভাবীর সাথে পরকীয়ার কারণে এবং ভাইকে পথের কাটা মনে করে সরিয়ে দিতেই এই হত্যা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আনিকেলীবড় গ্রামের মেরাজ মিয়া (৪৭) নিজ ঘরে ইফতার শেষে বের হলে আর ফিরে আসেননি। এর পরে এলাকাবাসী শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে খালের মধ্যে মেরাজের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করলে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়।

এরপর প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিহত মেরাজের ছোট ভাই বদরুল মিয়া (২৭) কে সন্দেহ করে এবং জানতে পারে ৩ দিন আগে নিহতের স্ত্রী বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছনে। তার এক ছেলে (৫) এবং এক মেয়ে (৮) ছিল।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বদরুল মিয়াকে নিয়ে থানায় চলে আসেন এবং নানা কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন। প্রথম দিকে বদরুল মিয়া স্বীকার না করে কীভাবে কি হয়েছে তা আল্লাহ জানেন বলে এড়িয়ে যেতে চাইলেও ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসে।

জিয়াউর রহমান জানান, কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের কারণে একসময় সে ঘটনা স্বীকার করে এবং আমরা জানতে পারি সে হত্যা করেছে। ভাবীর সাথে বদরুলের দীর্ঘ দিনের পরকীয়া ছিল এবং তারা কোরআন সাক্ষী রেখে বিয়েও করে প্রায় ২ বছর আগে। কয়েকদিন আগে পরকীয়ার বিষয়টি বড় ভাই জানতে পারলে স্ত্রীর সাথে প্রচুর ঝগড়া হয় এবং ৩ দিন আগে তার স্ত্রী-বাচ্চাদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। এতে বদরুল মনে মনে ক্ষুব্দ হয় এবং বড় ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বৃহস্পতিবার ইফতারের পর মেরাজ মিয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে ঘুরতে গেলে ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান নেয় বদরুল এবং রাত ১০টার দিকে যখন বড় ভাই মেরাজ বাজার থেকে ফিরছিলেন তখন প্রথমে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে পরে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লে আরও আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে বাড়িতে চলে যায়। যেহেতু সবাই আলাদা এবং ঘরে স্ত্রী নেই তাই সে রাতে কেউ আর মেরাজের খোঁজ নেয়নি। পরের দিন বিকেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, কোরআন ছুয়ে ভাবীকে মনে মনে বিয়ে করেছে এবং বড় ভাই ঝগড়া করার কারণে ভাবী বাপের বাড়িতে চলে যাওয়ায় পথের কাটা হিসেবে ভাইকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এই হত্যা করেছে বদরুল। এই ঘটনার মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে এবং আসামি বদরুল আটক আছে।

1179 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন