৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

কতৃপক্ষ নিরব কুলাউড়ার ফানাই নদীর বাঁধ কেটে দখল করে নিচ্ছে জমির মালিকরা;বন্যার আশংকা

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২১

ফেইসবুক শেয়ার করুন

কুলাউড়া প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া উপজেলার ফানাই নদীর খনন কাজ সম্পন্ন হতে না হতেই নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের মাটি বিক্রি চলছে অবাধে। নদীর তীরবতী জমির মালিকরা পার কেটে কেউ মাঠি বিক্রী করছে,কেউ নিজের কাজে বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে পার জমির সমান করে নিচ্ছেন।
কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না। কতৃপক্ষের ভূমিকা নিরব। এতে পাহাড়ী ঢল নামার সাথে সাথে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে নদী তীরের বাড়িঘর এ্ই আশঙ্কায় আতঙ্কিত ৪ ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কুলাউড়া উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ফানাই নদী দুইধাপে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯ কিলোমিটার নদীখনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

কিন্তুু বাঁধ নির্মানের কাজ করেনি প্রকল্পের ঠিকাদার।উক্ত প্রকল্পে নদী খননের পাশাপাশি বাঁধ নির্মান ও বনায়ন করার কথা থাকলে ও খনন ছাড়া আর কোন কাজ হয়নি।এলাকাবাসীর দবীর পেক্ষিতে দুই তিনটি বন্ধ করা রাস্তার কোন রকম সংযোগ দিয়ে চলে যায় ঠিকাদারের লোকজন।নিয়ম মাফিক বাঁধ নির্মান না করে চলে যাওয়ায় সুযোগে খনন কাজ শেষ হতে না হতেই একটি চক্র নদী তীরের প্রতিরক্ষা বাঁধের মাটি অবৈধভাবে বিক্রি শুরু করে।সরজমিনে গিয়ে দেথা যায় রাউৎগাঁও ইউনিয়নের একিদওপুর গ্রামের হদিছ মিয়া বাড়ীর দক্ষিন পাশে নদীর কোন বাঁধ নির্মান করা হয়নি, আজ পাহাড়ী ঢল আসলে এই অংশ দিয়ে নদী পানি এসে চৌধুরীবাজার মাদ্রাসা সহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হবে।মুকুন্দপুর গ্রামের মতিন মিয়ার বাড়ীর পশ্চিমে মন্নান মিয়া গং কয়েক জনের জমি থেকে মাঠি বিক্রী করে বাঁধের কোন চিন্হ রাখে নি।নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক কয়েকজন কৃষক বলেন মাঠি সরানোর প্রতিযোগীতা চলছে।অতীতের মতো নদী শাসনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন অনেকে।নদী বাড়ীর পাশে নদী গর্ভে বাঁশ রোপন শুরু করছেন। কতৃপক্ষ যদি এই কাজে বাঁধা না দেন তাহলে নদীখননের আসল উদ্দশ্য ভেস্তে যাবে। বিশেষ করে নদী তীরের রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ভবানীপুর, মুকুন্দপুর, একিদত্তপুর, পালগাঁও, বাঘাজুরা কবিরাজী,কর্মধা ইউনিয়নের বাবনিয়া ও হাসিমপুর। কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের প্রতাবী, গুতগুতি এলাকায় নদীর প্রতরক্ষা বাঁধও কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। অসাধু চক্র এমনভাবে মাটি বিক্রি করছে তাতে বাঁধের কোন অস্থিত্ব রাখছে না।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, যেসব স্পট থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে, সেখানকার জমির মালিকরা এই কাজের সাথে জড়িত। এদেরকে ধরলেই মাটি বিক্রির আসল তথ্য পাওয়া যাবে।

স্থানীয় লোকজন আরও জানান, এমনভাবে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে, নদীর বাঁধের কোন অস্থিত্বই রাখছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিপাত হলে বন্যার পানি দ্রুত লোকালয়ে প্রবেশ করবে। এতে ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।এ দিকে জুন মাস পর্যন্ত এই কাজের মেয়াদ রয়েছে কিন্তুু কাজ সম্পূ ন্ন হওয়ার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। অনেকে দায়ী করছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কতৃপক্ষকে।তারা যদি সঠিকভাবে নদী খননের মতো বাঁধটির নির্মান কাজ শেষ করে জরিপ করে নদী সহ বাঁধের সীমানা নিধারন করে যেত তাহলে আজ অবাদে বাঁধ নির্মানের মাঠিগুলো কেউ বিক্রী করতে পারতো না।অনেকে বলেন বাঁধ তো নির্মাণ করা হয়নি।যেখানে সেখানে ফেলে রাখা মাঠিগুলো তারা সরিয়ে তাদের জমিগুলো চাষাবাদের উপযোগী করছেন।
তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ শেষ হওযার পর নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে গাছ লাগানোর মাধ্যমে সামাজিক বনায়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু মাটি বিক্রির কারণে সামাজিক বনায়নের কাজও বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানায়, ফানাই নদী খননের পর অতিরিক্ত মজুদকৃত মাটি শর্ত সাপেক্ষে বিক্রি করা যাবে। কিন্তু সেটা করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড, কোন ব্যক্তি নয়। বিক্রি করতে হলে প্রথমে জেলা প্রশাসকের আবেদন করতে হবে। জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের সমন্বয়ে মাটির দাম নির্ধারণ করে তবেই বিক্রি করা যাবে।

এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান জানান, কোন ব্যক্তির মাটি বিক্রির কোন সুযোগ নেই। যারা এই অপকর্মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#

351 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন