মায়ের কবরের পাশেই শায়িত হয়েছেন রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান শামীম (৬৫)।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছিলেন তিনি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। গত মাসে স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে নিয়ে দেশে আসেন আতাউর রহমান শামীম। আগামী রোববারই (৩ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার।

শনিবার (২ মার্চ) নিহতের বোনের ছেলে তারেক হাসান এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল (শুক্রবার) মরহুমের প্রথম জানাজা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা সময় কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ও পরে দ্বিতীয় জানাজা মরহুমের নিজ গ্রামের বাড়ি উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর জালালিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় রাত ৯টার সময় অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে নিহত আতাউর রহমানের মা-বাবার কবরের পাশে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

শামীমের জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য মো. নওয়াব আলী আব্বাস খান, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার- ২ মো. আবু জাফর রাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান বাবুল, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. সিপার উদ্দিন আহমদ, দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন জানাজায় অংশ নেন।

জানা যায়, অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার গ্রামের বাড়ি কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে।

অগ্নিকাণ্ডের সময় শামীমের সঙ্গে থাকা তার আত্মীয় নূরুল আলম জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনার কিছু সময় আগে তারা দুজন একসঙ্গে হোটেল ক্যাপিটেল থেকে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় কফি খেতে যান। ওই রেস্তোরাঁয় অবস্থান নেওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের কয়েকটি আওয়াজ শুনে আতাউর রহমান শামীম উঁকি মেরে কালো ধোঁয়া দেখতে পান। আগুন লেগেছে বুঝে তারা প্রথমে নিচে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলিতে কিছু না দেখায় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন। এ সময় ভিড়ের মাঝে আতাউর রহমান শামীম নিখোঁজ হয়ে গেলে তাকে আর দেখতে পাননি তিনি।

হেলিপ্যাডের মাধ্যমে নূরুল আলম প্রাণে বেঁচে গেলেও অ্যাডভোকেট শামীম অগ্নিদগ্ধে মারা যান। পরে অ্যাডভোকেট শামীমের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।