নিউজ ডেস্ক ::

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামীকাল সোমবার সকালে এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে রূপ নেবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শহীদুল ইসলাম জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে গভীর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এই অবস্থায় গভীর সমুদ্র থেকে মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে রবিবারের (২৩ মে) মধ্যে উপকূলে ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

লঘুচাপটি নিম্নচাপের পর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘যশ’ (yaas)। এটি একটি পার্সিয়ান শব্দ, যার ইংরেজি হচ্ছে জেসমিন। বাংলায় যাকে বলা হয় জুঁই ফুল। এই নামটি দিয়েছে ওমান।

আবহাওয়াবিদরা আগামী ২৬ মে বুধবার ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বাংলাদেশের খুলনা ও সাতক্ষীরা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার উপকূলে আঘাত হানার শঙ্কা প্রকাশ করছে।

আবহাওয়াবিদ মুহম্মদ আরিফ হোসেন জানিয়েছেন, উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকার লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। পরবর্তীতে এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে নাগাদ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছাতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অফিস (আইএমডি) ও সাইক্লোন সেন্টার জানিয়েছে, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরের সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি রবিবার রাতের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে সোমবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ রূপ নেবে। সে সময় এর কেন্দ্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ কিমি। ওইদিনই আরো শক্তি সঞ্চয় করলে গতি উঠে যাবে ১০০ কিলোমিটারে। মঙ্গলবার ১৭০ আর বুধবার উড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, খুলনা উপকূলে আসলে গতি দাঁড়াবে ১৮৫ কিমিতে। বুধবারই এটি অতি প্রবল ঝড় হিসেবে উপকূল অতিক্রম করে গতি হারাতে থাকবে। বৃহস্পতিবার দুর্বল হয়ে ইয়াস নিম্নচাপে পরিণত হবে। এ সময় ১ থেকে ২ ফুট উচ্চতার সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এখনো পড়তে শুরু করেনি। ফলে কুমিল্লা, রাঙ্গামাটি, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর ও পাবনা জেলাসহ ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ চলমান। আবহাওয়াবিদ একেএম রুহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, মঙ্গলবার নাগাদ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে।