বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ’ ইতিহাসে এই তিনটি নাম অবিনশ্বর। ইতিহাসে এই তিনটি নাম যেন একই সূত্রে গাঁথা এবং এই নতুন করে ছাপা অক্ষরে যে নামটি বাঙালির সংগ্রাম ও অর্জনের যুক্ত হয়েছে, সেই নামটি শেখ হাসিনা। ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ৭১ বছর পার করে ৭২ বর্ষে পদার্পণ করছে।

পৃথিবীতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতি ও রাষ্ট্রের পরিচয় নির্ণয়ে স্বাধীন দেশের পতাকা বিশ্বের বুকে তুলে ধরার এমন গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাসে কম রাজনৈতিক দলেরই নাম লেখা আছে। আওয়ামী লীগ মানেই দেশের স্বাধীনতা, স্বাধীন পতাকা।
তবে যে সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন ৭১ বছর পরেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণমানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এটাই এ দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষে সৌভাগ্য।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন
শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে ইতিমধ্যে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন করেছি এবং নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হয়ে মানব উন্নয়ন সূচকে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। এগিয়ে আছে সুখী দেশের তালিকায়ও।
৭১ সংখ্যাটাই আমাদের কাছে বিশেষ আবেগ ও অর্জনের প্রতিক। আর আজ মুক্তিযুদ্বে নেতৃত্ব দানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্মদিন।
১৯৪৯ সালের তেইশে জুন ঢাকার টিকাটুলিতে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে যে দলটি আত্মপ্রকাশ করেছিল সেই দলটিই আজকের আওয়ামী লীগ।

দল আত্মপ্রকাশের ছয় বছরের মাথায় দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে দেয়া হয়, উদ্দেশ্য ছিল দলে ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চ্চা এবং অসাম্প্রদায়িকতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। ১৯৬৬ সালে যে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয় আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সেটাকেই মনে করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম পদক্ষেপ।এরপর ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থান,৭০ সালের নিবার্চন,৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ।
বাঙালি জাগরণের মহাজাদুকর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং ৭১ বছরের পরিনত আওয়ামী লীগের কাছে তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশাও অনেক। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে দলটি।
বর্তমানে যে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের কালো ছায়া বাংলাদেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে, তা থেকে আমাদের মুক্ত হওয়া জরুরি। সবার আগে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বেরিয়ে আসতে হবে। টানা ৩য় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল-দ্বন্দ্ব আর গ্রুপিংয়ের কারণে ক্ষতবিক্ষত দলটির তৃণমূল থেকে কেন্দ্র। শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের ফসল ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য জীবনবাজি রেখে নিরন্তর কাজ করছেন আর সেই ফসল মাঝপথে লুটে নিচ্ছে দলেরই কিছু নেতাদের আশ্রয় থাকা একশ্রেণীর লুটেরা। এদেরকে এখই থামাতে হবে। ভুলে গেলে ছলবে না, লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বুকের রক্ত, ত্যাগ তিতিক্ষা ও অঙ্গীকারদীপ্ত সংগ্রামী ভূমিকা রয়েছে দলটিতে। ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, এবং সমাজতন্ত্র- এই মূলনীতি নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

শুভ জন্মদিন গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

লেখক —
কামরুল হাসান লিজু
লিসবন(পতুর্গাল)
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
কুলাউড়া পৌর ছাত্রলীগ।