অনি চৌধুরী ঃ কুলাউড়া উপজেলা সদরের একমাত্র ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে বছরের পর বছর সরকারী বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তারসহ সেবাদানকারী কর্মচারী না থাকায় দুর-দুরান্ত থেকে আসা শিশু,মহিলাসহ সকল ধরনের রোগীরা সরকারের দেয়া সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানষিকভাবে ভোগান্তি ও আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগ ডাক্তার পদে দেশের বিভিন্ন স্থানে নুতন নিয়োগ দেয়ায় বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের বিরাজমান সমস্যা অবসান ঘটেছে। এতে করে গরীব-অসহায় রোগীদের সেবার মান বৃদ্ধিসহ সু-চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ পাবে বলে ভুক্তভোগীরা আশা করছেন।
জানা যায় কুলাউড়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার ৫ লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবাধানকারী ৫০ শয্যা হাসপাতালের সেটআপ অনুযায়ী ১০ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ মোট ৩৮ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। অথচ হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ দিনে-রাতে ১ জন স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল হক,আরএমও ডাঃ জাকির হোসেনসহ ৪ জন ডাক্তার অক্লান্ত পরিশ্রম করে ইনডোর-আউটডোর রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগ নুতন ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার সুবাধে কুলাউড়া উপজেলায় একসাথে মোট ২১ জন ডাক্তারের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসব নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তারদের কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদানের জন্য মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুরাতন ও নুতন নিয়োগপ্রাপ্ত ২৪ জন ডাক্তারদের মধ্যে হাসপাতালে কর্মরত থাকবেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা,আরএমও, ডেন্টাল সার্জন ও ৭ জন মেডিকেল অফিসারসহ ১০ জন এবং অপর ১৪ জন মেডিকেল অফিসার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে রোগীদের সেবা প্রদান করবেন বলে হাসপাতালসুত্রে জানা গেছে।
যেসব নুতন ডাক্তাররা নিয়োগ পেয়েছেন তারা হলেন শেখ মোহাম্মদ মিছবাহ উদ্দীন,সুরভী সেন,নাজমুস সিয়াম রাফি,আতিক ইসরাক,মোঃ আশরাফ হোসেন ভুইয়া,মোঃ ফয়সাল আহাম্মদ,খাদিজা আক্তার,মোঃ আরিফুজ্জামান,তানজিলা রুম্মন,নাদিয়া শারমিন রুমা,মোহাম্মদ নাঈম-উল-হক,পলাশ চন্দ্র বিশ^াস,সাকিয়া রিজওয়ানা,দেবাশীষ রায়,নাজনীন সুলতানা,মমতাজ খলিল মুন্নী,মোঃ আসিফ হায়দার,সুমাইয়া বিনতে জাহান,মোঃ এহসান আলমগীর,এন মেমচৌবী চনু ও তাপস দেবনাথ।
তবে নুতন নিয়োগে গুরুত্বপুর্ন পদের মধ্যে মেডিসিন,সার্জারী,গাইনী,এ্যানেসথেসিয়া,অর্থোঃ সার্জারী,কার্ডিওলজী,চক্ষু,শিশু,ইএনটিসহ ৯টি জুনিঃ কনসালটেন্ট পদে নিয়োগ না দেয়ায় ৫০ শয্যা হাসপাতালের পর্যাপ্ত পরিমান চিকিৎসা সেবা নেয়ার সুযোগ থাকা সত্বেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শুন্য থাকার কারনে বিশেষ করে স্বাভাবিক অপারেশনের রোগী,গর্ভবতী মা-দের সিজার রোগী ও দুর্ঘটনায় আহত রোগিরা সু-চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন। কারন উন্নত ও দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য তাদের মৌলভীবাজার জেলা সদরে অথবা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরন করতে হবে। এতে করে ভুক্তভোগীরা আর্থিক ও মানষিক ভোগান্তির সম্মুখীন হবেন। যেখানে বর্তমান সরকার চিকিৎসা সেবা জনগনের দোড়গোড়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন,সেখানে কুলাউড়া উপজেলার সাধারন জনগন ৫০ শয্যা হাসপাতালের সু-চিকিৎসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় হাসপাতালের ডাক্তার-কর্মচারী সঙ্কটের বিষয় একাধিকবার উত্থাপন করা হয়েছে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে বর্তমান এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এর প্রচেষ্টায় দীর্ঘদিনের বিরাজমান সমস্যার অবশেষে প্রতিকার পাওয়ায় রোগীসহ ভুক্তভোগীদের মধ্যে স্বস্থি ফিরে এসেছে। তিনি শুন্য অপর পদগুলো পুরনে দ্রুত প্রতিকার পাওয়া গেলে রোগীদের পুরোপুরি ভোগান্তির অবসান ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।