১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

কুলাউড়ায় প্রবাসী পরিবারকে গৃহবন্দী করে রাখার চেষ্টা – দেশে না আসতে হুমকি প্রদান

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২১

ফেইসবুক শেয়ার করুন

কুলাউড়া প্রতিনিধি::
কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মনবাজারে এক প্রবাসী পরিবারকে নানা নির্যাতন ও গৃহবন্দী করে রাখার পায়তারা করছে এক প্রভাবশালী পরিবার। এমনকি প্রবাসে থাকা তিন ভাই দেশে ফিরলে প্রাণে হত্যা সহ বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে জেলে প্রেরণের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রবাসী ছেলের মা। প্রভাবশালীরা বাড়ির পানি যাওয়ায় রাস্তাটুকু ও বন্ধ করে দেওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ির ভেতরে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এনিয়ে প্রভাবশালী ওই পরিবারের বিরুদ্বে আদালতে একটি শফি মামলা করেছেন প্রবাসী পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ব্রাহ্মনবাজার ইউনিয়নের নয়াগাও গ্রামের মৃত রেজাউর রহমান সোহাগ এর তিন পুত্র ইকবাল হোসেন জাবের ও আতাউর রহমান জুনেদ ইটালিতে এবং মুজিবুর রহমান জাহেদ দুবাইতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছেন। বাড়িতে শুধু তাদের মা ৬৫ বছরের জাহানারা খানম একা থাকেন। এ সুযোগে তাদের পাশ্ববতী বাড়ির মৃত আব্দুল কাদির পেশকারের ভাই প্রভাবশালী রশীদ মিয়া ও জসীম মিয়া গংরা তাদেরকে বাড়িতে থেকে উচ্ছেদ সহ অসহায় একা মহিলাকে নানা ভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। এমন কি প্রবাসী তিন ছেলে দীর্ঘদিন থেকে বাহিরে থাকলেও তাদের হুমকি-ধামকির ভয়ে দেশে আসতে ভয় পাচ্ছেন তারা।
প্রবাসী ছেলেদের মা জাহানারা খানম কান্না কন্ঠে জানান, ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর জমি সংক্রান্তের জের ধরে সম্পদের লোভে তার স্বামী রেজাউর রহমান সোহাগকে কোদাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করেন স্বামীর আপন ছোট ভাই আব্দুর রহমান আতিক। সেই সময় মামলা করতে চাইলে পাশ্ববতী বাড়ির এই প্রভাবশালী পরিবাররা সেই সময় স্থানীয় ভাবে সঠিক বিচারের আশ্বাস দিয়ে মামলা থেকে তাকে বিরত রাখেন। তখন তার ছেলে মেয়ে অনেক ছোট থাকায় তারা যা বলেছেন তিনি তাদের কথা বিশ্বাস করেই মেনে নিয়েছেন। তখন তার স্বামীর খুনি ছোট ভাই আতিককে গ্রাম থেকে বের করে দিলেও বর্তমানে সেই আতিককে নিয়ে ওই প্রভাবশালী রশীদ ও জসীম গংরা এবং তার স্বামীর আরেক ভাই মৃত ময়নুল ইসলামের ছেলে নজরুল সহ সবাই জোট বেধেঁ তাদেরকে নানা ভাবে নির্যাতন ও মানুষিক হয়রানী শুরু করেছেন। তিনি আরো বলেন, ভাই খুনের দায়ে সেই সময় যারা বিচারের মাধ্যমে রায় দিয়ে আতিককে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছিলো এখন তারা আমাদের ছেলেদের উন্নতি দেখে সেই খুনিকে এনে আমাদের জায়গা সম্পতি দখলের চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমরা যাতে কষ্ট পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই সেজন্য ওই প্রভাবশালীরা বাড়ির পানি যাওয়ার পথটুকু বন্ধ করে রেখেছে। ফলে অল্প বৃষ্টি হলেই পানিতে বাড়ির উটান ডুবে যায়। এছাড়াও তাদেরকে নানা কষ্টে বেকায়দায় ফেলার উদ্যেশে রশীদ ও জসীম গংরা তাদের ঘরের পেছনে ১০ শতক জায়গা তার আরেক আপন দেবরের কাছ থেকে চুপিসারে ক্রয় করে নিয়েছে যাতে আমরা পেছনদিকে রান্নাঘরের পানি ফেলতে না পারি। তার তিন ছেলে দীর্ঘদিন থেকে প্রবাসে রয়েছেন কিন্তু তাদেরকে দেশে আসতে বাধাঁ দিচ্ছে তারা। হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে যদি তারা দেশে এসে বাড়ির জায়গা জমি নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তাহলে তাদের বাবার মতো লাশ হতে হবে তাদেরকে। এই ভয়ে ছেলেরা দেশে আসতে ভয় করছে। এদিকে বৃদ্ধ মহিলা বাড়িতে একা থাকায় প্রায় সময় দিনে রাতে নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে প্রভাবশালীরা। তাদের ভয়ে ছেলেরা বাড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে দিলেও রাতের আধারে কয়েকটি সিসি ক্যামেরা কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। প্রভাবশালী দের এই অত্যাচারে ওই প্রবাসী পরিবার প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
নাম প্রকাশ্যে অনুচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্ধা জানান, মৃত পেশকার কাদির,রশীদ ও জসীম গংরা এলাকায় অনেকের জায়গা জমি ফুসলিয়ে জবরদখল করে নিয়েছেন, এখন প্রবাসী এই পরিবারের দিকে তাদের চোখ পড়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জসীম মিয়ার সাথে মুটুফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, এলাকায় তাদের পরিবার সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষিত পরিবার। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তারা আমাদের সমান নায়, তারা তাদের বাড়ির পানি যাওয়ার রাস্তা নিজেরা দেওয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে আমরা না। বরং তারা আমাদের ক্রয়ক্রিত জায়গা থেকে ২ ডিসিমিল জায়গা তাদের দখলে নিয়ে বাউন্ডারি করে ভেতরে ডুকিয়ে রেখেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মনবাজার ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মমদুদ হোসেন জানান, উভয় পক্ষের ঘর পাশা-পাশি রয়েছে। পানি বন্ধের বিষয় নিয়ে আমরা কয়েকবার বিবাদী পক্ষের সাথে বসেছিলাম তারা তারিখ দিয়েছিলো পরে বসবে পরে আর এ বিষয়ে বসা হয়নি। তবে উভয় পক্ষের মন-মালিন্যতা রয়েছে

591 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন