২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

সরকারি সংস্থাকে নিজের  টাকায় চলতে হবে: একনেকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: মে ৪, ২০২১

ফেইসবুক শেয়ার করুন

নিউজ ডেস্ক::  সরকারি সংস্থা বা কম্পানিগুলোকে সরকারের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেদের আয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ভার্চুয়াল সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘সরকারি সংস্থা, যেগুলো ব্যবসার জন্য স্থাপিত হয়েছে, যেমন—বিটিসিএল, বীমা, ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স, এগুলো তো নামেই কম্পানি। তারা যেন নিজেরা নিজেদের খরচ চালাতে পারে। আমরা কত দিন এখান (সরকারি কোষাগার) থেকে টাকা দিয়ে তাদের চালাব। এটা ইকোনমিক্যালি (অর্থনৈতিকভাবে) গ্রহণযাগ্য নয়। এটা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আজকে আবার মূল্যায়ন করেছেন।’

করোনা মহামারিকালে দীর্ঘ বিরতির পর একনেক সভায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পের অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সাবধান! খাল খননের নামে যেসব কাণ্ড হয়, এটা তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জানেন। আমরাও সবাই মোটামুটি জানি। তিনি বলেছেন, সেচকাজে ওপরের দিকে হালকা পরিষ্কার করে বেশি কাজ দেখানোর একটু প্রবণতা রয়েছে। সেটার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সাবধান করেছেন।’

একনেক সভায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন’ প্রকল্পের সংশোধনী আনা হয়েছে। এতে বেড়েছে খরচ। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বিএসএমএমইউয়ের কাজ শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বলেছেন—দীর্ঘদিন ধরে চলছে এটা, তাড়াতাড়ি শেষ করুন। আর কত দিন নেবেন?’
উপজেলা পর্যায়ে যেসব স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে, তা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেলের নামে যে স্টেডিয়ামগুলো করা হবে, সেখানে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। নো রিজার্ভ। কোনো ক্লাবের বা ব্যক্তির আওতায় থাকবে না। ইউএনওরা দেখভাল করতে পারবেন। কিন্তু সবাই খেলার অধিকার পাবে। সেটা উন্মুক্ত রাখতে হবে এবং বসার জায়গাও রাখতে হবে।’

করোনার টিকা প্রসঙ্গে নিজ দপ্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি না, ভারত তার নিজের জনগণকে টিকা না দিয়ে আমাদের দেবে। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের যথেষ্ট বরাদ্দ আছে, আমাদের দেশে অক্সিজেনের সংকট নেই, আশা করি আমাদের সমস্যা হবে না।

একনেকে অনুমোদন ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প : একনেকে ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন আট হাজার ৯৯১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বৈদেশিক উত্স থেকে ঋণ দুই হাজার ৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় অংশ নেন।

অনুমোদিত প্রকল্প : ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (প্রথম পর্যায়); ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড-মোরেলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের পানগুচি নদীর ওপর পানগুচি সেতু নির্মাণ; এক হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প; ৫২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ; ১৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে (সর্বমোট ব্যয় এক হাজার ৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (প্রথম সংশোধিত); ৩৩৮ কোটি ৫৪ টাকা ব্যয়ে রাঙামাটি জেলার কারিগরপাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প; আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; এক হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; এক হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং তিন হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদু্যুতায়ন বোর্ডের বিদ্যুত্ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) প্রকল্প।

286 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন