১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

র‌্যাব কমান্ডারের বিচক্ষণতায় ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিস্থিতি’ এড়ালো মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২০

ফেইসবুক শেয়ার করুন

অনি চৌধুরীঃ জানাযায় বিপুল লোকসমাগমের শঙ্কা ও অনিশ্চয়তাকে পাশ কাটিয়ে নির্বিেঘ্ন সম্পন্ন হলো মৌলভীবাজার জেলার বরুনা মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আব্দুল মুমিতের দাফন প্রক্রিয়া। ২৯ এপ্রিল ভোর ৪টা ৩০ ঘটিকায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দেওপাশা গ্রামে মৃতের বাড়ির উঠানে দুই শতাধিক মুসল্লির উপস্থিতিতে নামাজে জানাযা শেষে মৃত মুহাদ্দিসকে কবরস্থ করা হয়।
বরুনা মাদরাসার মুহাদ্দিস পদে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মাওঃ আব্দুল মুমিত। বহুদিন এ মাদ্রাসায় দায়িত্বরত থাকায় এলাকার সাধারণ জনগনের মধ্যে তার ভিন্নরকম একটি গ্রহণযোগ্যতা ছিল। বিপুল ভক্তবৃন্দের পাশাপাশি ছিল অসংখ্য প্রাক্তন ছাত্রও। মূলত এ কারনেই তার জানাযা কেন্দ্রিক ব্যপক লোকসমাগমের সম্ভাবনা তৈরি হয়। দেখা দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিস্থিতি পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা।
কিন্তু র‌্যাব, পুলিশ ও প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তের কারনে কোন রকম অনাকাংখিত পরিস্থিতির উদ্ভব ছাড়াই লাশ দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মোঃ আনোয়ার হোসেন শামীম’র তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তার তৎপরতা ও ব্যবস্থাপনায় সকালের জন্য অপেক্ষা না করে ভোর থাকতেই জানাযা ও দাফন শেষ করে মরহুমের পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে মাথায় তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করলে মুহাদ্দিস আব্দুল মুমিতকে দ্রুত সিলেটে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বজনরা। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সিলেট থেকে মৌলভীবাজারে লাশ আনার পর দাফনের পূর্ব পর্যন্ত সারারাত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দাফন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা পালন করেন র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। রাতভর নির্ঘুম দায়িত্ব পালনের পর সেহেরি খেতে যেতে না পারায় শুধু পানি খেয়েই রোজা রাখেন এ র‌্যাব কর্মকর্তা।
এ প্রসঙ্গে এএসপি আনোয়ার বলেন, আসলে ওই সময় বাসায় যেয়ে সেহেরি খাওয়ার মতো সময় ও পরিস্থিতি ছিল না। কারন সিদ্ধান্ত হয়েছিলো, ফজরের নামাজের পরপরই দাফন প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলা হবে। যদি ওই মুহূর্তে আমরা সেহেরি খেতে আসতাম, এর মধ্যেই বিপুল জনতা জানাযার জন্য উপস্থিত হয়ে যেতে পারতো এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকতো। তাই সেহেরি খেতে না পারলেও আমি এটা ভেবেই খুশি যে, অবশেষে সবকিছু কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়ে দাফন সুসম্পন্ন হয়েছে।
এএসপি আনোয়ারের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় উঠোনে স্বল্পসংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে জানাযা সম্পন্ন হয়। এমনকি জানাযার লাইনে দাড়ানোর পরও তিনি উপস্থিত মুসল্লিদেরকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়ানো নিশ্চিত করেন এবং অতিরিক্ত মানুষজনকে উঠোন থেকে চলে যেতে অনুরোধ জানান। তার সপ্রতিভ ও সক্রিয় ভূমিকার প্রতি উপস্থিত মুসল্লিদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় বারবার। এছাড়াও পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন৷
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন মানবিক কাজের মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন শ্রীমঙ্গল র‌্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। তিনি ৩৪ তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার ব্যাচের একজন কর্মকর্তা।

534 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন