২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

আমার গলিত লাশের সন্ধানে। এম,আতিকুর রহমান আখই

প্রকাশিত: এপ্রিল ১১, ২০২০

ফেইসবুক শেয়ার করুন

সারা বিশ্বজোড়ে চলছে মরনব্যাধি করোনা ভাইরাসের মহা তান্ডব। লন্ড ভন্ড হয়েগেছে বিশ্ব মোড়লদের সমস্থ পরিকল্পনা, সু-পরিকল্পনা, কু-পরিকল্পনা। সংশয় সংকট দিন দিন বিস্তিৃতি লাভ করছে। ধন সম্পদ, মিসাইল রকেট, পারমাণবিক অস্ত্র, ক্ষমতা প্রভাব সব কিছু আজ অসহায় সকল ক্ষমতার মালিক রাব্বুল ইজ্জতের দেয়া করোনা নামক এক ছোট্ট ভাইরাসের কাছে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে সারা পৃথিবীর ন্যায় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও এখন লক ডাউন। দুনিয়ার অন্যান্য দেশের লক ডাউন আর আমাদের দেশের লক ডাউন এর মধ্যে বিস্তর ফারাক।
লক ডাউন ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে উন্নত দেশের জনসাধারণ নিজ নিজ বাসা বাড়িতে হোম কোয়ারান্টাইন পালন করছেন অত্যন্ত সচেতনভাবে, শুধু মাত্র করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর আতংক ছাড়া আর কোন সংশয় বা সংকট তাদের মধ্যে নেই। কারন , খাবার, চিকিৎসা, পানি বিল,গ্যাস বিল,বাসা ভাড়া, দোকান ভাড়া ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ পরিবারের কর্তা ব্যক্তির উপর অর্পিত সকল দায় দায়িত্ব তাদের দেশের সরকার নিজে বহন করার ঘোষণা দিয়ে জনগনকে করেছেন চিন্তামুক্ত। আমরা গরীব দেশের মানুষ সরকার চাইলেই সকল দায়িত্ব নিতে পারবেনা। সাধ্যমতো সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মানুষকে সচেতন ও সহযোগিতা করার। সরকারি সাহায্য অনেক জায়গায় সুষ্ঠভাবে বিতরণ হলেও কোন কোন জায়গায় খাদ্য সামগ্রী চুরি ও চিন্তাইর অভিযোগ উঠছে।
এমনিতেই সরকারি বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে তা কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। হোম কোয়ারান্টাইন এ থাকা অনেকেই অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। দির্ঘ মেয়াদি ছুটি থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মিল, কল কারখানাসহ কর্মজীবী নারী পুরুষের কাজ কর্ম বন্ধ। এক প্রকার অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছেন অনেকে। এক দিকে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে বাসা বাড়ির মাসিক ভাড়া ও ব্যাংক ঋণের কিস্তির জন্য হাহাকার করছেন সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাংক ঋণের কিস্তি ৬ মাসের জন্য স্থগিত শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলেও বাস্তবে ঘটছে বিপরীত, এমপিও ভুক্ত শিক্ষক সহ অনেকের বেতন থেকে কেটে রাখা হচ্ছে ঋণের কিস্তি। যাদের একাউন্টে সামান্য টাকা জমা আছে আপদকালিন সময়ের জন্য তাদের এখান থেকেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণের কিস্তির টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে একজন উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম যে, ঋণের কিস্তি না নেয়া সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা এখনো আসেনি।
লক ডাউন বলি আর ছুটি, যাই বলিনা কেন, বর্তমান চলমান অবস্থা আরো দীর্ঘ মেয়াদি হলে করোনা ভাইরাসের চেয়ে অনাহার অর্ধাহার আর নানাবিধ দুশ্চিন্তায় মানুষের মৃত্যুর মশাল দীর্ঘ হওয়ার সম্ভবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায়না।
বর্তমান পরিস্থিতিতে কার কখন কোথায় কি ভাবে মৃত্যু হবে বলা মুশকিল। চলার পথে কাউকে প্রত্যক্ষ বা পরক্ষভাবে কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এই সময়ে মৃত্যুবরণ করলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জানাযার নামাজে অনেকেই শরীক হতে পারবেননা। মৃত্যুর দু চার দিন পর আমার লাশ পচে গলে যাবে তখন আর কেউ আমার গলিত লাশের সন্ধানে আসবেনা।

873 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন