২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

আমি দিয়েছিলাম বই, খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন অস্ত্র

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২০

ফেইসবুক শেয়ার করুন

ঢাকা: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, বিএনপির বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ছাত্রদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (০৪ জানুয়ারি) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারাই এভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে- জিয়াউর রহমান বলি, এরশাদ বলি, এমনকি খালেদা জিয়ার আমল, সব সময় আমরা দেখেছি তারা এই মেধাবী ছাত্রদের ব্যবহার করেছে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, মাদক, মানিলন্ডারিং- নানাভাবে তাদের ব্যবহার করা, তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার একটা হাতিয়ার হিসেবে।’

পড়ুন>> ভারমুক্ত হলেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সা. সম্পাদক

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা দেখেছি ভিন্ন ধারার রাজনীতি, আমরাই যখন ছাত্র ছিলাম দেখেছি আইয়ুব খান মার্শাল ল’ দিয়ে আসার পর সে ক্ষমতা দখল করে। আগের দখল, পরে দল গঠন, এরপর ছাত্রদের হাতে অস্ত্র দিয়ে ছাত্র সংগঠন করে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান নেওয়ার অপচেষ্টা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় যখন জিয়াউর রহমান আসে, তখনও দেখি তার একই চরিত্র, আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এই জিয়াউর রহমান মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে তাদের ব্যবহার করতো তাদের একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে।’

‘তাদের ব্যবহার করতো অবৈধভাবে দখল করার ক্ষমতা বৈধ করার হাতিয়ার হিসেবে। এভাবে বহু মেধাবী ছাত্রের জীবন তারা নষ্ট করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনকি ৭ খুনের আসামি তাকে ছেড়ে দিয়েও রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার শুরু হয়েছিল সেই বিচার বন্ধ করে দিয়ে সেই যুদ্ধাপরাধী তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। অর্থাৎ একটা সুস্থ রাজনৈতিক ধারাকে নষ্ট করার প্রচেষ্টা এরা সব সময় নিয়েছে।’

ছাত্ররাই ভবিষ্যত নেতৃত্ব দেবে- উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ছাত্ররা আমাদের ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যৎ নাগরিক, স্বাধীন দেশ, ভবিষ্যতে স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনা- এই মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে থেকেই তো বেরিয়ে আসবে। যারা আগামী দিনে এই দেশকে পরিচালনা করবে। তাদের যদি বিপথে পরিচালনা করা হয়, তাদের যদি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে তারা কখনও সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারে না, পারবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আদর্শ ছাড়া, নীতি ছাড়া, সততা ছাড়া কখনও কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না, এমন কোনো নেতৃত্ব দেশকে কিছু দিতে পারে না। জাতিকে কিছু দিতে পারে না। মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করতে পারে না। কোনো ধরনের সফলতা দেখাতে পারে না।’

‘হ্যাঁ, সাময়িকভাবে অর্থ সম্পদের মালিক হতে পারে, নাম ডাক হতে পারে কিন্তু তারা বিলীন হয়ে যায়, কিন্তু দেশের জন্য বা ইতিহাসে কিছু রেখে যাওয়ার মতো কাজ তারা করতে পারে না। ’

বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের রাজনীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি থেকে যাত্রা শুরু। স্কুল জীবন থেকে করেছেন। তিনি স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, একটা দেশ দিয়ে গেছেন। দিতে পেরেছেন কেন, পেরেছেন একটা কারণেই; তার শক্তি ছিল, সততার শক্তি, আদর্শের শক্তি, নীতির শক্তি, নীতির সঙ্গে কখনও আপোষ করেন নাই। কারো কাছে মাথা নত করেন নাই। যেটাকে সত্য বলে জেনেছেন সেই সত্য অর্জনে সর্বদা যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত ছিলেন।’

ছাত্রলীগকে আদর্শ নিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে এই ছাত্রলীগ যেন একটা নীতি আদর্শ নিয়ে চলে।… মনে রাখতে হবে ছাত্রলীগের হাতে আমি কাগজ-কলম তুলে দিয়েছিলাম, খালেদা জিয়া অস্ত্র দিয়েছিল আমি দিয়েছিলাম কাগজ-কলম।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালেক মোহাম্মদ আলী ও বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়।

347 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন